” আপনাকে একটা কথা বলার আছে আমার।
” কী কথা আইরিন.?
” কীভাবে যে বলবো.?
” না বলতে পারলে, থাকুক।
” না না বলছি আমি।
” আচ্ছা বলো।
আইরিন অনেক্ষন থেমে বলল,
” আমি আপনাকে পছন্দ করি। ভালোবাসিও বলতে পারেন।
সিজান এতোদিন এই ভয়টায় পাচ্ছিল। এবার কী বলবে সে.? তার কী বলা উচিত.? বন্ধুর বোনের সাথে প্রেম, আয়ান যদি জানতে পারে। কতোটা কষ্ট পাবে সে। বলবে বন্ধুত্বের সু্যোগ নিয়ে আমি তার সাথে বেঈমানী করেছি। আমাদের এতোদিনের বন্ধুত্ব টাই নষ্ট হয়ে যাবে। না না তা হতে পারে না।
” কী হলো, চুপ করে আছেন যে.? কিছু বলবেন না.?
” আইরিন এটা ঠিক না। হতে পারে না। আমি তোমার ভাইয়ের বন্ধু, তোমার ভাই যদি জানতে পারে কতোটা কষ্ট পাবে সে? খারাপ ভাববে আমাকে। তোমার ধারণা আছে.?
” সে কেনো খারাপ ভাববে আপনাকে? আপনি কি একজন খারাপ মানুষ? বাজে ছেলে আপনি? সে যদি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে, তাহলে বোনের ভালোবাসার মানুষ হিসেবে আপনাকে খারাপ ভাববে কেনো?
” আইরিন তুমি বোঝার চেষ্টা করো। আমি ওর বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে তোমার সাথে প্রেম করতে পারবো না।
আইরিন সাথে সাথে ফোন কেটে দেয়। সিজান চিন্তায় পড়ে যায়। মেয়েটা জিদ দেখিয়ে ফোন কেটে দিলো। উল্টাপাল্টা কিছু করবে না তো আবার।
|
সিজান সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নিচে নামতেই আয়ান, আইরিনকে নিজের বাসায় দেখে অবাক হয়ে যায়। এরা এখানে কেনো?
সিজান,আইরিনের দিকে তাকায়৷ দেখে আইরিন তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। সিজানকে দেখে আয়ান হেসে বলে,
” কীরে কেমন আছিস.?
” ভালো আছি। তুই এখানে হঠাৎ তাও আইরিনকে নিয়ে?
” কেনো আসতে পারি না নাকি.?
” না সেটা না,প্রথমবার দেখেছি তো তাই।
” আসলেই এই ফাযিল মেয়েটা ঢাকায় বেড়াতে চায়। তাই ওকে নিয়ে আসলাম।কিন্তু…
” কিন্তু কী.? বেড়াতে এসেছে, বেড়াবে সমস্যা কোথায়.?(সিজান হাঁফ ছেড়ে বাঁচল,যাক আইরিন ওইসব কথা কিছু বলেনি কাউকে)
” থাকবে কোথায় বেটা? আমি তো মেসে থাকি জানস.।
এমনসময় সিজানের আম্মু বলল,
” আইরিন যতোদিন ইচ্ছা আমাদের এখানে থাকবে। আয়ান, আমাদের কি চোখে পড়ে না তোর?
” কিন্তু আন্টি…?
” কোনো কিন্তু নয়, তুই আইরিন কে আমার কাছে রেখে যায়। আমার একজন সঙ্গী হবে কথা বলার জন্য।(হেসে)
আম্মুর কথা শুনে সিজানের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। কী বলছে এইসব, আইরিন এখানে থাকবে? এখানে থাকলে তো মেয়েটা আমাকে জ্বালিয়ে মারবে। কিন্তু এখানে থাকা যাবে না, এই কথা বলাও যাবে না। আয়ান মাইন্ড করবে।
সিজান, আইরিনের দিকে তাকাতেই আইরিন হেসে চোখ টিপ দেয়। তা দেখে সিজানের চোখ বড়বড় হয়ে যায়।
” আচ্ছা আন্টি আইরিন থাকুক। আমি তাহলে আজ আসি।
” আচ্ছা সাবধানে যাও।
” সিজান,তোর সাথে পরে দেখা হচ্ছে।
” হুম।
আয়ান চলে যায়। সিজান ডাইনিং টেবিলে নাস্তা খেতে বসে। সিজানের আম্মু আইরিনকে নাস্তা খাওয়ার জন্য বসতে বলে।
আইরিন, সিজানের সামনে বরাবর চেয়ারে বসে।
সিজান খাচ্ছে, যখনি সামনে আইরিনের দিকে চোখ যাচ্ছে, দেখে আইরিন তার দিকে তাকিয়ে থাকে।
” এই মেয়ের কি লজ্জা শরম কিছু নাই নাকি? কীভাবে বেশরমের মতো একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে।(মনে)
কী সমস্যা, নাস্তা খাচ্ছো না কেনো?
” কই, খাচ্ছি তো..।
” খাও ভালো করেই খাও।
” ভালো করেই খাচ্ছি।
নাস্তা করা শেষ হলে সিজান উপরে নিজের রুমে চলে যায় রেডি হতে।
অফিসের জন্য রেডি হয়ে সিজান নিচে নেমে আসে।
তখন আইরিন এসে সিজানের সামনে দাঁড়ায়।
” কী সমস্যা.?
” আসার সময় আমার জন্য চিপস, চকোলেট নিয়ে আইসেন।
” বাচ্চা নাকি তুমি..?
” এগুলা সবাই খায়,বাচ্চা হওয়া লাগে না।
সিজান কথা না বাড়িয়ে আইরিনের পাশ কেটে চলে যায়। আইরিন, সিজানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
” ইস! কবে যে এই হিরো আমার হবে.?
|
দুপুরে আইরিন, সিজানের নাম্বারে ফোন দেয়।
” হুম বলো।
” লাঞ্চ করছেন.?
” হুম।
” কী করেন এখন.?
” কাজ ছাড়া আর কী করবো.?
” মেয়েদের সাথে লাইনও মারতে পারেন,বলা যায় না।
” হোয়াট..? এই মেয়ে তুমি আমাকে কী ভাবো.।
” আপনাকে নিয়ে অনেক কিছুই ভাবি।
” বেশি কথা না বলে, ফোন রাখ।(ধমক দিয়ে)
” ধমক দিয়েন না তো,ভয় লাগে।
সিজান কিছু না বলে ফোন রেখে দেয়।
” কী ভাব ছেলের.? হু।
চলবে..
~ ইমতিহান ইমরান।